বাংলায় বাউল গান-চর্চার ঐতিহ্য দীর্ঘকালের পর্ব -০২
মানুষরূপে এই বৃন্দাবন
জানে যত রসিক সুজন –
যশোদাকে লালন জানান, ‘তোর ছেলে যে গোপাল, সে সামন্য নয় মা।’ বৃন্দাবন-লীলায় রাধা-কৃষ্ণতত্ত্ব প্রসঙ্গে কৃষ্ণদাস কবিরাজের কথা শান্তি সিংহ বলেছেন, যেখানে পড়ি ‘রাধা পূর্ণশক্তি, কৃষ্ণ পূর্ণ-শক্তিমান।’ লালনও লেখেন, ‘কৃষ্ণ রাধা ছাড়া নয়।’ এমনকি চৈতন্য দেব রাধাকৃষ্ণ ভাব-বলয়িত কেন, চরিতামৃত মেনেই লালন জানান – ‘তিনটি বাঞ্ছা অভিলাষ করে/ হরি জন্ম নিলে শচীর ঘরে।’ লালন কেন চৈতন্য-লীলার গীতিকার হলেন? যদি এমন প্রশ্ন কারো মনে জাগে, তবে প্রমাণরূপে শান্তি সিংহ অদ্বৈতাচার্যের পত্রাংশ উদ্ধৃত করেন, যা মহাপ্রভুকে প্রেরিত – ‘বাউলকে কহিও ইহা কহিয়াছে বাউল।’ তাঁর গানে লালন বলেন, ‘দেখবি যদি সোনার মানুষ দেখে যারে মন পাগল।’
বাউল গান প্রসঙ্গে গ্রন্থের শেষে হিতকরী পত্রিকার শ্রদ্ধার্ঘ্য এবং ভারতী পত্রিকায় প্রকাশিত লালনজীবনী দুটি দুষ্প্রাপ্য লেখার পুনর্মুদ্রণ বইটির মূল্য ও গুরুত্ব বাড়িয়েছে। গ্রন্থ নির্মাণে প্রকাশক যত্নবান। সুন্দর প্রচ্ছদ, শোভন মুদ্রণ ও কাগজে এবং প্রায়-নির্ভুল ছাপার জন্য ধন্যবাদ জানাই। বাউল গান নিয়ে যাঁরা ভাবেন, গবেষণা করেন, তাঁরা এই মূল্যবান গ্রন্থপাঠে ঋদ্ধ হবেন। পাঠক হিসেবে বইটির বহুল প্রচার কামনা করি।
Source: kaliokalam.com